প্রকাশিত: ০২/০৩/২০১৭ ২:৪০ পিএম , আপডেট: ০৭/০৬/২০১৭ ৯:৩৪ এএম

আবদুল্লাহ আল আজিজ,উখিয়া::

কক্সবাজার জেলায় মোবাইল কোম্পানীর থ্রি-জি সেবা বর্তমানে জিরো-জি’তে পরিণত হয়েছে। রবি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা চরম হতাশায় পড়েছে। এই কোম্পানীই সর্বত্র থ্রি-জি চালুর প্রচার করলেও শুধু মাত্র টু-জি’তে সীমাবদ্ধ রয়েছে।

আবার তা নামে মাত্র থ্রি-জি। অনেকে দুঃখ করে বলেন, জীবনে অনেক প্রতারণায় পড়েছি, এবার থ্রীজি প্রতারণায় শিকার হচ্ছি আমরা

রবি সীম ব্যবহারকারী সরোয়ার কামাল বলেন, ইন্টারনেট নির্ভর কাজ করতে গিয়ে প্রচন্ড বেগ পেতে হচ্ছে। এখানে নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট গতির কোন পরিবর্তন আসেনি। শুধু প্রতারনামূলক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে থ্রী-জি সিম বলে বিক্রি করা হলেও তার সুফল পাচ্ছেনা গ্রাহকরা।
তাছাড়া কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নেটওয়ার্ক পর্যন্ত পাওয়া যায় না।
দেখা যায় রবি সিমের ‘জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে’-গণমাধ্যমে এরকম নানা চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নজর কাড়তে সক্ষম হলেও কাঙ্খিত সেবা দিতে পারছে না এ কোম্পানি।
এতে করে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন থ্রিজি’র গ্রাহকরা। এমনটাই জানিয়েছেন নিম্নমানের সেবায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের অনেকে।
অথচ সেবার নামে নির্ধারিত অর্থ কেটে নিতে এতটুকু কার্পণ্য নেই তাদের।
রবি থ্রিজি প্যাকেজ ব্যবহার করেন, এমন কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।

রবি কোম্পানীর থ্রিজি ব্যবহারকারী জসিম খান বলেন, ফেসবুক বা কোনো ওয়েবসাইটে ঢুকতে চাইলে অপেক্ষা করতে হয় টু-জি গ্রাহকদের মতোই। থ্রি-জি ও টু-জির কোনো পার্থক্য বুঝতে পারি না।

কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটি পড়ুয়া মাসুদ কায়সার এলাকার অবস্থা আরও ভয়াবহতা উল্লেখ করে বলেন, সেখানে কখনও থ্রিজি আবার কখনও টুজির সিম্বল ভেসে ওঠে। গতি খুবই কম।

অপরদিকে কোটবাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শরিফ মাহমুদ শাহজাদা ও মোঃ নুরুল আবছার বলেন, উখিয়া উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানী অন্যান্য সিমের গ্রাহকের চেয়ে রবি’র গ্রাহক অনেক গুণ বেশী হলেও সেবার দিকে রবি অত্যান্ত পিছিয়ে।
রবি’র টাওয়ার প্রায় সময় পাওয়ার শূন্য হয়ে থাকে। ভাসা ভাসা নেটওয়ার্ক দিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনার শিকার হয় গ্রাহকরা। বার বার নেটওয়ার্ক বিপর্যয়, অবাঞ্চিত বিল, অপ্রত্যাশিত কোম্পানী নম্বর থেকে কল ও ম্যাসেজ এর ভারে নুব্জ্য হয়ে পড়ে রবির গ্রাহকরা।

এ বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে উখিয়ায় আশংকা জনক হারে হ্রাস পাচ্ছে রবির গ্রাহক। রবি সিম বদলে গ্রাহক হচ্ছে অন্যান্য অপারেটরের। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে আগামীতে উখিয়া উপজেলায় রবির অর্জিত সুনাম নষ্ট হয়ে গ্রাহক শূন্য হয়ে পড়ার আশংকা করছেন বিজ্ঞজন।

মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানীর অসহনীয় প্রতারনা থেকে মুক্তি ও উন্নত নেটওর্য়াকিং এর আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহলও।

উখিয়া কলেজে বি.বিএ অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র শফিউল আলম ও আবদুল্লাহ আল মামুন নামের রবি গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘রবি নামে প্রতারণা , ভোগান্তিতে আছে সহস্রাধিক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এখন সময় থ্রিজির। আছে দেশ-দেশান্তরে আপনজনের সাথে যোগাযোগের অনেক সহজ মাধ্যম। খুব বেশী গতিতে নেট ব্যবহার করার সুযোগ গ্রাহকের। সময়ের সাথে সাথে বদলে যাওয়া পৃথিবীর গতির সাথে পায়ে পা রেখে চলার প্রবল আগ্রহী দেশের সকল শ্রেণির মানুষ। তাই তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সংগ্রহ করছে পছন্দের (দামী) ইলেকট্রিক ডিভাইস। কিন্তু এত স্লো যদি হয় নেটওয়ার্কের গতি, তাহলে কিভাবে নেট ইউজ করবে কাংখিত গ্রাহকরা?’

দ্রুত গতিতে নেট ব্যবহার করার বদলে গ্রাহকরা এখন সম্পূর্ণভাবে ভোগান্তিতে সময় পার করে যাচ্ছে। রবিসহ বিভিন্ন নেটওয়ার্ক সার্ভিস কোম্পানির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনেছে উখিয়া-কোটবাজার এলাকার সহস্রাধিক নেট ব্যবহারকারী।

সর্বোপরি, সরকার এবং কর্তৃপক্ষের প্রতি সহস্রাধিক গ্রাহকের জোর দাবী ‘যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত নেটওয়ার্ক সমস্যা দূর করে সঠিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নয়নে সঙ্গে থাকার।

কোটবাজারস্থ নিশা কম্পিউটারের ম্যানেজার মোঃ ইব্রাহীম বলেন, উখিয়া থানার অন্তর্গত রত্না পালং ইউনিয়নের ভালুকিয়াতে রবির থ্রি জি প্রতারণা সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। মন চাই রবি সিমটা পাল্টিয়ে ফেলি।

উখিয়া কোটবাজারের স্থানীয় এক সংবাদকর্মী শফিউল্লাহ শাহীন মন্তব্য করেন, আমার এখানে রবি সিম ফেলে দিয়েছি, টাওয়ারের নিচেও নেট স্লো। এছাড়া প্রতিটি কোম্পানি সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। উখিয়া,কোটবাজার,মরিচ্যা, রামু, কক্সবাজার সব খানে রবির প্রতারণা।

কক্সবাজারে কর্মরত সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, রবি আর রবি নাই, নামকরণ করে শনি করে দিলে মনে হয় স্পিড হবে।

উখিয়া ডিজিটাল সেন্টার পরিচালক ওসমান সরোয়ার বলেন, থ্রি-জি নামে রবির বাটপারি ছাড়া আর কিছুই নয়। এয়ারটেল এবং রবি মিলিত হয়ে নেটওয়ার্ক সিস্টেম আরো বাজে হয়ে গেছে। দ্রুতগতির থ্রিজি ও মুলাতত্ত্ব!

কক্সবাজার সরকারি কলেজের বি.এ প্রথম বর্ষে পড়ুয়া রহীম উল্লাহ শাহেদ বলেন, শপথ করে ফেলেছি, রবি সিম নিয়ে আর কোন কাজ করব না, ব্যাস এতটুকু ছাড়া আর বলার কিছুই নেই।
এভাবেই গ্রাহকরা তিক্ততা তুলে ধরে এই কোম্পানীগুলোর উপর ফুঁসে উঠেছে যার ফলে যে কোন মুহুর্তে থ্রি-জি’র নামে প্রতারণা বন্ধে ও নেটওয়ার্ক কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করতে আন্দোলনে যেতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তাই মোবাইল কোম্পানীগুলোর প্রতি দ্রুত থ্রিজি সার্ভিস এর মাধ্যমে গ্রাহক সেবা বৃদ্ধি ও নেটওয়ার্ক সবসময় সচল রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ, পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও উত্তীর্ণ!

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য সহকারীসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে ঘিরে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা ...

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে ৮.৮ ডিগ্রি, টেকনাফে সর্বোচ্চ ৩১

শীতের তীব্রতা বাড়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে দেশের ...

১৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি, ইউপি উদ্যোক্তার স্বামী কারাগারে

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভুয়া সিল–স্বাক্ষর ব্যবহার করে ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের জন্মনিবন্ধন তৈরির ...

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...